অ্যামাডিয়াস (১৯৮৪)
পরিচালক : মিলোস ফোরম্যান
আইএমডিবি রেটিং: ৮.৪/১০
অ্যামাডিয়াস উলফগ্যাং .............
যে মুভিটির কথা বলতে যাচ্ছি তা একজন বিশ্ববরেণ্য মিউজিশিয়ানের জীবন নিয়ে নির্মিত। শুন্যস্থানে সেই মহান সংগীতকারকের নামের বাকি অংশটি বসিয়ে দিলে আর রিভিউ লেখার প্রয়োজন নেই। আমার মনে হয় অনেকেই বুঝে ফেলেছেন কার কথা বলতে চাচ্ছি।
জ্বি ‘মোজার্ট’
৮ টি অস্কার আর ৪টি গ্লোডেন গ্লোব জয়ী এ মুভিটির ঝুলিতে রয়েছে আরও ৪১ টি পুরস্কার আর সর্বমোট ৫৩ টি নমিনেশন।
আর পরিচালক ওয়ান ফ্লু ওভার দ্য কুকুস নেস্ট খ্যাত মিলোস ফোরম্যান।
এ ছবির কল্যাণে আবারও সুযোগ হলো আরেকটি পাওয়ারফুল অভিনয় দেখার। এফ মারে আব্রাহামের চোখ ধাঁধানো অভিনয় আর মোজার্ট এর অতিমানবীয় সংগীত এ ছবির মুল প্রাণ। মজার বিষয় এফ মারে আব্রাহাম কিন্তু মোজার্টের নাম ভূমিকায় অভিনয় করেননি। তার চরিত্রের নাম অ্যান্টোনিও স্যালেরি। তৎকালীন ভিয়েনার আরেকজন প্রথিতযশা মিউজিশিয়ান। মারে অস্কার আর গোল্ডেন গ্লোব দুটোই ছিনিয়ে নিয়েছিলেন স্যালেরির ভূমিকায় অভিনয়ের জন্য।
যারা ভাবছেন মুভিটিতে দেখবেন মোজার্টের বিজয়গাঁথা আর সাফল্য, তারা ভুল করবেন। একজন দুর্দান্ত মেধাবী শিল্পীর বিশৃঙ্খল, দেনার দায়ে নিমজ্জিত আর অদূরদর্শী জীবনের গল্প হচ্ছে অ্যামাডিয়াস। ছোটবেলা থেকেই মোজার্ট ছিলেন অসম্ভব রকমের মেধাবী। আর স্যালেরি কিশোর বয়স থেকেই মোজার্টের নাম শুনে আসা আর সংগীতকে ধ্যানজ্ঞান মানা একজন সাধারন মানুষ। স্যালেরির বাবা কখনই চাইতেন না তার ছেলে সংগীতচর্চা করুক। কিন্তু পিতার মৃত্যু স্যালেরির সামনে খুলে দেয় সংগীতচর্চায় সম্ভাবনার দ্বার। স্যালেরি ধীরে ধীরে ভিয়েনায় নাম কুড়াতে থাকে এবং এক সময় জায়গা করে নেয় সম্রাটের কোর্ট মিউজিশিয়ান হিসেবে। স্যালেরির কাছে এ সবই ছিলো ঈশ্বরের কৃপা । ঠিক সে মুহূর্তে ভিয়েনায় আগমন ঘটে মোজার্টের আর স্যালেরির জীবন পাল্টে যায় নিমিষেই । স্যালেরি আর তাঁর সমগোত্রীয় শিল্পীরা হতবাক হয়ে যান মোজার্ট এর মেধায়। যে সুর সৃষ্টিতে স্যালেরির মত শিল্পীদের গলদঘর্ম অবস্থা সে সুর সৃষ্টি করা মোজার্টের জন্য বা হাতের খেল। কিন্তু দুর্ভাগ্য তৎকালীন বিশিষ্ট মিউজিশিয়ানরা মোজার্টের সৃষ্টি যে এক অতিমানবীয় সৃষ্টি তা বুঝতে পারলেও সাধারন জনগণ ও সম্রাটের কাছে তা অনেক ক্ষেত্রেই বোধগম্য হয়নি। আর এ সুযোগটাই স্যালেরি গ্রহণ করলেন। তৈরি করলেন নীল নকশা।
স্যালেরির ঈর্ষাপরায়ণতাই এ মুভির মূল বিষয়বস্তু। মোজার্টের মেধা নিজের অদূরদর্শী জীবন-যাপন আর স্যালেরির ঈর্ষা -এ দুইয়ের মাঝে হারিয়ে যেতে থাকে। কিন্তু সত্যিকারের প্রতিভা থাকলে মানুষ মৃত্যুর পরও তাকে সশ্রদ্ধ চিত্তে স্মরণ করে। যে মোজার্ট জীবিত অবস্থায় তাঁর মেধার প্রাপ্য সম্মানটুকু পাননি , মৃত্যুর আজ কত শত বর্ষ পর সেই মোজার্টকেই অধীস্ট করা হয়েছে সর্বকারের অন্যতম শ্রেষ্ঠ মিউজিশিয়ান হিসেবে।
ছবিটির ফিনিশিং এক কথায় দুর্দান্ত। মুভিটিতে ব্যবহার করা হয়েছে মোজার্টের কালজয়ী সব সৃষ্টিগুলো। যারা মুভিটি দেখবেন তাঁদের কাছে স্যালেরির অভিনয় অনেকদিন মনে থাকবে।
উইকিপিডিয়ার সৌজন্যে Requiem Mass in D Minor এর প্রতিলিপি